ক্লিক করুন এখানে

ডায়াপার র‍্যাশ | diaper rash

শিশুর ডায়াপার সময়মত পরিবর্তন না করলে বা ভেজা ডায়াপার দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করার ফলে ত্বক সংবেদনশীল হয়ে উঠে এবং ত্বকে লালাভ চাকার মতো হয়ে ফুলে ওঠে, অর্থাৎ ত্বকে ফুসকুড়ির (diaper rash) মতো দেখা যায়। সাধারন কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


 কেন হয়ঃ

 ১।শিশুকে আঁটসাঁটভাবে ডায়পার পরালে র‍্যাশ হতে পারে।

২।শিশুর ত্বক খুব সংবেদনশীল,তাই সে বারবার প্রস্রাব ও পায়খানার সংস্পর্শে আসলে আর্দ্রতার কারণে ত্বকের প্রতিরোধ স্তর দূর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে মলত্যাগের পর অনেক সময় ধরে ডায়পার পরিবর্তন করা না হলে শিশুর নরম ত্বকে ফুসকুড়ির (baby yeast infection)  মতো দেখা যায়।

৩।ডায়পার দ্বারা ঢাকা থাকার কারনে শিশুর নিতম্ব, উরু ও যৌনাঙ্গে বাতাস চলাচল বিঘ্নিত হয় ও এসব স্থানে খুব সহজে ব্যাকটেরিয়া বা ইস্ট ইনফেকশন (diaper rash yeast) হয়ে থাকে।

৪।এ্যাকজিমা বা ত্বকের প্রদাহ হলে শিশুর ডায়পার র‍্যাশ হতে পারে।  

৫। ডিটারজেন্ট বা সাবান দিয়ে কাপড়ের ডায়পার ধোয়ার কারনে র‍্যাশ হতে পারে। তাছাড়া লোশন, তেল, বেবি ওয়াইপস ব্যবহারের ফলেও ডায়পার র‍্যাশ হতে পারে।

৬। কিছু কিছু কাপড়ের ডায়াপারে টলুইন ও জাইলিনের মত উপাদান থেকে যা কারনে র‍্যাশ হয়। 



ঘরোয়া উপায়ে প্রতিকার (diaper rash treatment):

১।পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বকের যে কোনো ইরিটেশন প্রতিরোধ করতে পারে ও র‍্যাশ সৃষ্টিকারী আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে।  

২।ক্যাস্টর অয়েলের ঘনত্ব ও বেশী; এতে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দমনকারী উপাদান রয়েছে,যা ব্যথা কমাতে পারে ও ডায়াপার র‍্যাশ দূর করতে সাহায্য করে।

৩।ডায়াপার কেনার সময় খেয়াল করবেন আরামদায়ক কি না এবং লিকপ্রুফ কি না। শিশুকে নিয়ে  ভ্রমণের সময় হোক, রাতে ঘুমানোর সময় হোক,খেয়াল রাখতে হবে, চার-ছয় ঘণ্টার মধ্যেই যেন ডায়াপার পরিবর্তন করা হয়।  

৪। শিশুকে মাঝে মাঝে ডায়াপার ছাড়া রাখার অভ্যাশ করুন,যাতে ওর নিম্নাঙ্গে হাওয়া-বাতাস লাগার সযোগ পায়।

৫। শিশুকে প্রতিদিন গরমপানি ও বেবি সোপ দিয়ে গোসল করান।

৬। ডায়াপার বদলানোর পর প্রতিবার শিশুর নিম্নাঙ্গ সাবানের পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। নরম, পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে দিন,টিস্যু পেপার নয়। আর প্রতিবার শিশুকে  ১০-১৫ মিনিট ডায়াপার ছাড়া রাখুন।

৭।কাপড়ের ডায়াপার 15 মিনিট ধরে গরমপানিতে ফুটিয়ে নিন। তারপর শুকিয়ে আবার ব্যবহার করুন।

৮।বাচ্চা প্রস্রাব বা পায়খানা করলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিবর্তন করে দিতে হবে। ছেলেশিশুকে ডায়াপার পরানোর সময় সাবধানে পরাতে হবে যেন প্রস্রাব করলে তা গড়িয়ে ঠিকমতো শোষিত হতে পারে।

৯। বাচ্চার ডায়াপার র‍্যাশ হলে, রাতে ডায়াপার না পরিয়ে প্লাষ্টিকের ক্লথ ব্যবহার করাই ভালো, তাতে র‍্যাশ তাড়াতাড়ি ভালো হওয়ার সুযোগ পাবে।

১০। র‍্যাশের স্থানগুলোতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেরয়েডাল ক্রিম (diaper rash cream) ,অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম বা টপিক্যাল অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করুন।

১১। ডায়াপার খোলার পর নারকেল তেল, বেবি লোশন বা ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। পাউডার নয়। 

 

কি করবেন নাঃ 

১। শিশুর দেহে ডায়াপারের ওপর প্লাস্টিকজাতীয় প্যান্ট পরাবেন  না। কারণ,এই প্যান্ট আর্দ্রতাকে ভেতরে আটকে রাখবে ও ডায়াপার র‍্যাশকে তীব্র করবে। 

২।র‍্যাশ হলে শিশুকে চিনিযুক্ত খাবার দেবেন না। কারন চিনি ছত্রাক সংক্রমণকে ত্বরান্বিত করে। 

৩।র‍্যাশ থাকলে ডায়াপার খোলার পর বেবি লোশন এবং পাউডার ব্যবহার করবেন না ।

  

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেনঃ 

১। র‍্যাশ যদি চারদিনের বেশি থাকে (bad diaper rash), সেই সাথে বাচ্চার জ্বর, ফোসকা, র‍্যাশ থেকে পুঁজ ক্ষরণ ও ব্যথা থাকে তাহলে অবিলম্বে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান।

 

জেনে রাখুনঃ

১। জন্মের সাত দিনের মধ্যে বাচ্চার ডায়াপার র‍্যাশ হতে পারে, তবে ৯-১২ মাস বয়সে এটি বেশি হয়ে থাকে।

২। ডায়াপার পরিয়ে বাড়িঘর বা কাপড় নোংরা করা থেকে বাঁচা যায় ঠিকই, কিন্তু ভেজা ডায়াপারের কারণে ঠান্ডা লেগে শিশু অসুস্থ ও হয়ে যেতে পারে। সেদিকে নজর দিতে হবে।

৩। কিছু শিশুর ত্বক বেশী সংবেদনশীল হয়, যাদের ডায়াপার পরালেই র‍্যাশ হয়। তাই  ডায়াপার পরানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে শিশুর কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা।  











কোন মন্তব্য নেই

If you have any doubts please let me know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.