যমজ সন্তান লালন পালন । baby twins newborn care
যমজ সন্তান; বাবা-মায়ের আনন্দকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় সন্দেহ নেই। সেই সাথে বাবা,মা'কে দুই সন্তান লালনে রকম সমস্যার মোকাবেলা ও করতে হয়। আজকের লেখা তাদের জন্য, যারা যমজ সন্তানের (baby twins newborn care) মা,বাবা অথবা খুব শীঘ্রই হতে যাচ্ছেন।
কেন যমজ সন্তান হয়ঃ
১।যে সব মহিলা ফলিক এসিড বেশি গ্রহণ করেন, তাদের যমজ সন্তান হবার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০-৪০% বেশী থাকে।
২।মায়ের বংশে যমজ হওয়ার ইতিহাস থাকলে যমজ জন্মদানের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৩।যে সকল মহিলার ওজন ও উচ্চতায় বেশি, তাদের ও যমজ সন্তান হবার সম্ভাবনা থাকে।
৪।হরমোনজনিত কারণেও যমজ সন্তান হয়ে থাকে।
৫। বন্ধ্যাত্ব
সমস্যায় ভুগছে এমন নারী, চিকিৎসায় ওষুধের প্রভাবে ও যমজ অথবা একাধিক সন্তান জন্ম দিয়ে
থাকেন।
৬।সাধারনত প্রথমবার গর্ভধারণের সময় যমজ কম হয়। তবে একাধিক সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে যমজ হওয়ার হার বেশী থাকে।
৭। যারা ৩৫ বছরের পর সন্তান ধারণ করেন, তাদের ক্ষেত্রে ও যমজ সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৮। টেস্ট টিউব বেবির ক্ষেত্রে একাধিক ভ্রূণ মায়ের গর্ভে সঞ্চার করা হয়। এই ক্ষেত্রে যমজ সন্তান (twin baby) জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কি কি জটিলতা হতে পারেঃ
১।গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তাল্পতা,উচ্চ রক্ত চাপ,খিঁচুনি, ডায়াবেটিস এমনকি শ্বাসকষ্ট ও হতে পারে। তাই আগে থেকেই
যথেষ্ঠ অর্থ,রক্তের
জোগাড় ইত্যাদি পূর্বপরিকল্পনা থাকতে হবে।
২।সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তস্রাব হতে পারে।
৩। অপরিণত ও কম ওজনের শিশু, বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ সঠিক ভাবে মেনে চললে, অনেক ঝুকি এড়ানো সম্ভব।
১। গর্ভে যমজ সন্তান থাকলে রক্ত স্বল্পতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত ভিটামিন এবং মিনারেলও খাওয়া দরকার। সেই সাথে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার বেশী খেতে হবে।
২।যমজ সন্তানদের আলাদাভাবে দুধ পান করানো উচিত, যেমন একজনের পর আরেকজনকে পান করাতে পারেন।
৩।কোনো কারণে এক শিশু অসুস্থ হলে অপরজনকে
আলাদা বিছানায় রাখুন। কারন, অন্যজনের মধ্যেও তা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪।দুই বেবিকে একই কটে রাখবেন না।
৫। রাতে বাচ্চার ঘুম ভাঙলে স্বামী, স্ত্রী দুজনে মিলে সময় দিলে ঘুম পাড়ানো অনেক সহজ হয়ে যায়। এতে মায়ের উপর ও চাপ কমে যায়।
৬। শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে। বাথরুম করলে দ্রুত পরিষ্কার করুন। দেরী করবেন না। আর বাড়িতে অতিথি এলে তিনি যেন ভালোমতো হাত মুখ ধুয়ে শিশুকে স্পর্শ করেন।আর অসুস্থ কেউ যেন বাচ্চার কাছে ঘেষতে না পারে।
৭।বড় হলে,মাঝে
মাঝে দু’জনকে কিছু সময়ের জন্য আলাদা রাখুন। এতে
তাদের দোষ গুন গুলি আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে পারবেন ও দুজনের মধ্যে এভাবে মমত্ব বোধ
বাড়বে বই কমবেনা।
৮। যমজ
বাচ্চা হলে ও দু’জন একই রকম আচরন করবে-এমন ভাববেন না। যেমন একজন খেলতে
চাইছে এ জন্য অন্য বাচ্চাকে ও খেলতে বাধ্য করবেন না, বা দুজন একই রকম খাবার
খাবে,এমন নাও হতে পারে। তাই বকাঝকা করবেন না।
৯। দুজনের পছন্দ,পড়াশোনায় দক্ষতা বা আচরন একরকম নাও হতে পারে। তাই কখনও দুজনের মধ্যে তুলনা করবেন না। যেমন একজন হয়ত পড়াশোনাতে ভালো, আর অন্যজন পড়াশোনাতে অত ভালো না কিন্তু খেলাধূলায় ভালো। তাই প্রত্যেকের আলাদা গুন ও স্বকীয়তাকে গুরুত্ব দিন ও উৎসাহ দিন সমান ভাবে।
১০।দুজন সন্তান হওয়ার কারণে খুব ছোট বেলা থেকেই তারা এক-অপরের সঙ্গী হয়ে উঠবে। ফলে আপনার বাচ্চারা কোন দিন নিজেদের একা মনে করার সুযোগই পাবে না। তবু পরস্পরের সম্পর্ক যেন কখনও নষ্ট না হয়,সেদিকে কড়া দৃষ্টি রাখুন।
১১।যমজ বাচ্চা
লালন পালনে পরিবারের
সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। শিশুর সুস্থতার পাশাপাশি মা-বাবা দু’জনই যেন সুস্থ থাকেন সে জন্য পরিবারের
সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
১৩।আপনার গভীর
ভালোবাসা দুজনই যেন সমানভাবে পায় । একজন কম,আরেকজন বেশী ভালোবাসা পাবে—এমন
যেন না হয়।
জেনে রাখুনঃ
২।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, যমজ সন্তানরা প্রেগনেন্সির ৩৭ সপ্তাহের মধ্যেই জন্মগ্রহণ করে।

কোন মন্তব্য নেই
If you have any doubts please let me know