ক্লিক করুন এখানে

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কিছু টিপস । how to control diabetes fast

ডায়াবেটিস এখন মহামারী আকার ধারন করেছে বিশ্ব জুড়ে। এই রোগ যে কোন বয়সেই হতে পারে, তবে বংশে কারো থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের অন্য কারো হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে।



লক্ষন কি কিঃ

১। অতিরিক্ত পিপাসা পাওয়া

২। ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

৩। নিয়মিত খাওয়ার পরও ঘন ঘন খিদে

৪। শরীরের বিভিন্ন অংশের কাটাছেঁড়া সহজে সারে না

৫। যথেষ্ঠ খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যায়।
৬। হাতে-পায়ে ব্যথা বা মাঝে মাঝে অবশ হয়ে যাওয়া

৭। প্রচণ্ড পরিশ্রান্ত অনুভব করা
৮। চোখে ঝাপসা দেখা

 

কি কি জটিলতা হতে পারেঃ

 

১। চোখের ছানিপড়া বা পুরো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

২। কিডনী ফেইলার, ব্রেন স্ট্রোক।

৩। হার্ট স্ট্রোক, যে কোন অংশ প্যারালাইসিস।

৪। কিডনী, লিভার ডেমেজ হতে পারে।

৫। বড় ধরনের দূর্ঘটনায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরন হলে, রক্ত সহজে বন্ধ না হলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।



কি করনীয় (how to control diabetes fast)

১। তাজা সবজি ও ফল খান। কাঁচা অথবা পাকতে শুরু করেছে এমন ফল খান, যেহেতু এগুলোতে চিনির পরিমাণ কম থাকে। তবে চিবিয়ে খাবেন তাতে কার্বোহাইড্রেট রক্তের সঙ্গে সহজে মিশবে।

২।বেশি ভাজাপোড়া বা বেশি চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। 

৩। খাবার সময় ধীরে ধীরে ও চিবিয়ে খাওয়া। 

৪।সর্বদা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকা। একটানা বেশীক্ষন বসে না থাকা।

৫। খাবারে ম্যায়োনেজ, মাখন, ঘি ইত্যাদি পরিহার করা।

৬। কম চর্বিযুক্ত দই খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে টকদই। 

৭। ভিটামিন ডি' যুক্ত খাবার গ্রহণ করা,  যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।

৮। কম চর্বিযুক্ত খাবার বা কম তেলে তৈরি খাবার । 

৯। প্রচুর পানি পান করা।

১০। চিনিযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন জুস, কোল্ড  ড্রিঙ্কস ইত্যাদি। 

১১। প্রতিদিন সঠিক সময়ে ও পরিমিত খাবার খাওয়া। অতিরিক্ত নয়।  

১২।ওজন ঠিক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭০% কমে আসবে।

১৩।লোভনীয় ফ্রাইস, পিজ্জা, বার্গার বা অন্যান্য ফাস্ট ফুড স্থুলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, হজমে সমস্যা এবং হৃদরোগের জন্য দায়ী। এগুলো ইনসুলিনের মাত্রায়ও ক্ষতিকরভাবে হেরফের ঘটিয়ে ডায়াবেটিসের দিকে ধাবিত করে।

১৪। প্রতিদিন অন্তত ৪০মিনিট হাঁটাহাঁটি করলেই আপনার দেহে ইনসুলিনের মাত্রাকেও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখার জন্য যথেষ্ট। 

১৫। দারুচিনি তেল  বা পাউডারে আছে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনার প্রাকৃতিক সক্ষমতা।ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৪৮% পর্যন্ত কমে আসবে এই উপাদানটির কারনে। 

১৬। শুধু ডায়াবেটিস নয়,হার্ট এ্যটাক,ফুসফুস ক্যান্সারের মতো ভয়ঙ্কর রোগের কারন ও ধুমপান। সুতরাং ধুমপান ছেড়ে দিন আজই, এক্ষুনি !

১৭। কফি বা চা পানিতে রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ানো এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ কফি পান করুন। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া ।

১৮। একটি বা দুটি সেদ্ধ ডিম খাওয়া যেতে পারে। ডায়েটে ভিটামিন ডি যোগ করার জন্য ডিম বেছে নিতে কোন সমস্যা নেই।

১৯।অতিরিক্ত মানসিক চাপ ডায়াবেটিসকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যোগ বা হালকা        ব্যয়াম করতে পারেন। হাসি খুশী থাকুন। মোবাইল/টিভিতে কমেডি প্রোগ্রাম দেখলে ও মন ভালো থাকবে।

২০। প্রতিদিন অন্তত এক বাটি সালাদ খান। এর মধ্যে থাকতে পারে টমেটো, পেঁয়াজ, গাজর, শসা, লেটুস পাতা, রসুন ইত্যাদি। এক চা চামচ ভিনেগার ও দিতে পারেন সালাদে। 

২১।ভাতরুটিগমআলুভুট্টা ইত্যাদি শর্করা ধীরে ধীরে পরিপাক ও শোষিত হয় বলে রক্তের গ্লুকোজ হঠাৎ করে খুব বেশি বাড়ে না; তাই ডায়াবেটিক রোগীর শর্করার উপাদান হিসেবে এগুলো গ্রহণ করা ভাল।  


কিছু প্রাকৃতিক টোটকাঃ

১। শুধু শর্করা নিয়ন্ত্রণই নয়, করলা জ্বর, ঋতুকালীন যন্ত্রণা, সর্দি-কাশির সমস্যাতেও কাজ দেয় ডায়াবেটিস-সহ আরো বেশ কিছু রোগে করলা বেশ কার্যকরী,যদি নিয়মিত খাওয়া হয়। করলার রস ব্রেস্ট ক্যানসারের কোষকে ও ধ্বংস করতে সক্ষম।

২।নিম রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে আরেকটি চমৎকার উপাদান ।এটি ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে।

৩। আমলকির জুস খাওয়া ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ভালো। এ ছাড়া প্রতিদিন দুই বেলা আমলকির গুঁড়াও খেতে পারেন শুধু পানি বা অন্য কোন তরলের সাথে মিশিয়ে। এটি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

৪। গ্রিন টি পেনক্রিয়াসের কার্যক্রম বাড়িয়ে ইনসুলিন তৈরিতে সহায়তা করে।

৫। টাইপ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য দারচিনি খুবই উপকারী। এটি রক্তের সুগার লেভেল কমায়। দারচিনির গুঁড়া করে বা চাতে দিয়ে পান করতে পারেন

৬। অ্যালোভেরা জেল টাইপ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য উপকারী। হলুদ, তেজপাতা অ্যালোভেরা জেল পানির সাথে মিশিয়ে দিনে দুই বার পান করুন

৭। মেথিতে উচ্চ মাত্রার ফাইবার থাকে বলে স্টার্চকে গ্লুকোজে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে যা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সাহায্য করে টেবিল চামচ মেথি বীজ গ্লাস পানিতে  ভিজিয়ে সারা রাত রেখে সকাল পান করুন।

৮। জাম ডায়াবেটিসের জন্য খুব উপকারি৷

৯। রসুন রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে দেয়না৷প্রতিদিন ১/২ কোয়া রসুন খান নিয়মিত।

 

জেনে রাখুনঃ

১। নারীদের কোমরের মাপ ৩৫ ইঞ্চির বেশি এবং পুরুষের কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চির বেশি হলে তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

২। জানলে অবাক লাগবে যে শুধুমাত্র নিজেকে ফিট রাখতে পারলেই আপনার পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকলেও আপনার নাও হতে পারে।

৩। উন্নত দেশে মোট জনসংখ্যার ১১%-এর বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি।

৪। আরেক ধরণের ডায়াবেটিস দেখা যায়, সেটা হল গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস। তাই গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়মিত মাপাটা খুব জরুরী। পরবর্তীতে সন্তান জন্মের পরে মা সুস্থ হয়ে গেলে ও ঝুঁকি রয়ে যায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসের।





কোন মন্তব্য নেই

If you have any doubts please let me know

Blogger দ্বারা পরিচালিত.