হোমওয়ার্কে সাহায্য | help do homework
স্কুলের পড়ার চাপ ছাড়াও প্রতিদিনের হোমওয়ার্ক করা অনেক সময় শিশুদের জন্য ঝামেলা ও বিরক্তিকর হয়ে পড়ে। বাবা,মা’র আন্তরিক প্রচেষ্টা তাদের ভার অনেকটাই লাঘব করতে পারে। ছোট থেকেই যদি সে দ্রুত হোমওয়ার্ক করে ফেলার অভ্যাস করে, তাহলে ভবিষ্যতে তার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে।
কি করবেনঃ
১।একটি আরামদায়ক পরিবেশ তৈরী
করুন বাচ্চার লেখাপড়ার জন্য যেমন সুন্দর করে সাজানো একটি টেবিল ও চেয়ার যেখানে সে
তার খাতা বই গুছিয়ে রাখবে ও স্বচ্ছন্দে পড়াশোনা করবে।
২। শিশু যখন
হোমওয়ার্ক করবে তখন টিভি বন্ধ করুন
ও মোবাইল/ট্যাব দূরে রাখুন।
৩। আপনি যদি হোমওয়ার্কে সাহায্য
করেন তাহলে
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে
আপনাকে শতভাগ
ফোকাস করতে
হবে ও
পরিষ্কার ধারনা নিতে হবে, যাতে শিশুরা সহজে বুঝতে পারে।
৪। শিশুরা পড়ার চেয়ে ছবি কিংবা অবজেক্ট দেখে কিন্তু সহজে শিখতে পারে ও মনে রাখতে পারে। দরকার হলে প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে বিভিন্ন অ্যাপ
(Homework Help app) নামিয়ে নিন,যেখানে সহজে বিভিন্ন সমাধান দেখানো হয়।
৫। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে সে একবারে বুঝবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই বারবার বোঝাতে দ্বিধা করবেন না বা বিরক্ত হবেন না।
৬। মাঝে মাঝে আপনি যদি না বুঝেন,নির্দ্বিধায় সেটি প্রকাশ করুন। বলতে পারেন,"এই সমস্যাটি কীভাবে করা যায় বুঝতে পাচ্ছিনা। চল একসাথে চিন্তা করি "।
৭। ওর পছন্দের কোন খাবার বা টিভিতে ভালো কোন প্রোগ্রাম দেখানোর লোভ দেখাতে পারেন। যেমন--“চল এই হোম ওয়ার্কটা শেষ করে ফেলি তারপর তোমার প্রিয় খাবার বা প্রোগ্রাম দেখতে পারবে।“
৮। দীর্ঘক্ষণ শিশুকে জোর করে পড়ার মধ্যে ধরে রাখবেন না। এক সাথে পুরো হোমওয়ার্ক শেষ না করে মাঝে ২/৩ মিনিট ব্রেক দিতে পারেন। যেমন ৩০ মিনিট করে ৩/৪ মিনিট ব্রেক। তাহলে সন্তান বিরক্ত হবে না।
৯।পড়ালেখার বিষয়টি যথাসম্ভব খেলাচ্ছলে বা গল্পের মাধ্যমে বোঝাবার চেষ্টা করুন।
১০। সুন্দর একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করে তার টেবিলের সামনে টাঙ্গিয়ে রাখুন। সেখানে স্কুলে যাওয়া, খাওয়াদাওয়া, খেলাধূলা,হোমওয়ার্ক এবং ঘুমানোর সময় লিখে রাখুন। যতটা সম্ভব নিয়ম মেনে চলার জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করুন। পুরষ্কার ও দিতে পারেন নিয়ম মেনে চলার জন্য।
১১। তুলনামূলক সহজ হোমওয়ার্কটি
আগে করতে দিন।কঠিন গুলো সময় নিয়ে বোঝান। দরকার হলে তার স্কুলের অন্য বন্ধুর
সাহায্য নিতে পারেন।তবে এই কাজটি তাকে দিয়েই করান।অর্থাৎ সে-ই যেন তার বন্ধূটির
সাথে কথা বলে তার কাছ থেকে বিষয়টি বুঝে নেয়। এভাবে তার মধ্যে সমস্যা সমাধানের
প্রক্রিয়াটি বোঝার ক্ষমতা তৈরী হবে।
১২।বিশেষ করে গনিতের সমস্যা সমাধানে (Homework Help with math) উদাহরনের আশ্রয় নিন।যেমন খেলনা,বল,পুতুল ব্যবহার করে যোগ ও বিয়োগ করা শেখালে সে আনন্দের সাথে গ্রহন করবে।
১৩।পড়াশোনা শুরুর প্রথমেই খুব ভালো ফল করতে হবে এমন প্রত্যাশা করবেন না। এতে তার মনে চাপ তৈরী হবে। বরং শিশুর তাকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলুন।
১৪। হোমওয়ার্কে মাঝে মাঝে শিশুর উপর ছেড়ে দিন এবং যতটুকুই পারে তার জন্য প্রশংসা করুন। ভুলের জন্য বকা নয়।
১৫। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তার কাছ থেকে স্কুলের গল্প শুনুন যেমন সে কি খেয়েছে, কার সাথে খেলেছে,কার পড়া ভালো লেগেছে ইত্যাদি।
১৬। কোনও সমস্যা সম্পর্কে আপনার সন্তানের শিক্ষকের সাথে কথা বলুন ও পরামর্শ নিন। প্রয়োজন হলে স্কুলে আপনার বাচ্চার আচরনের ব্যাপারে ক্লাশ টিচার বা তার পাশে বসা ছেলে বা মেয়েটিকেও জিজ্ঞেস করতে পারেন।
১৭। অতিরিক্ত দুষ্টামী করলে শাসন করুন। পরক্ষনেই আদর করে বুঝিয়ে দিন কেন বকা খেয়েছে এবং পরবর্তীতে এমন যেন না করে।
কি করবেন নাঃ
১। সব সময় হোমওয়ার্ক
নিয়ে রাগ করবেন না। ভুল করলে বিরক্ত হবেন না।
২। পড়ালেখার বিষয়ে অন্য
বাচ্চার সঙ্গে
তুলনা করবেন
না।
তাকে কোন প্রতিযোগিতার মুখে ফেলবেন না।
৩। সে
কোন ভুল করলে, আগে তার ভালো কাজের প্রশংসা
করুন তারপর ভুলের ব্যপারে বলুন।
৪। পড়ালেখার বা হোমওয়ার্ক
প্রথমেই একেবারে
ঘড়ি ধরে
রুটিনমাফিক না করে শিশুর ইচ্ছে
অনুযায়ী দিনের
যেকোনো সময়
বসান।
৫। বকাঝকা বা শাসন
করে হোমওয়ার্ক
করাতে বসাবেন না। এতে বাচ্চার মনে
পড়ালেখা ভীতি
তৈরি হয়।বরং
শাসনের পরিবর্তে
প্রয়োজনে সাময়িকভাবে
আদর, করে
জেনে নিন, এখন না বসলে পরে কখন বসতে চায়।
৬। হোমওয়ার্ক করার
সময় শিশুর
স্বাভাবিক চঞ্চলতাকে গুরুত্ব দেবেন না। উপেক্ষা করুন।

কোন মন্তব্য নেই
If you have any doubts please let me know