নবজাতকের জন্ডিস । baby is jaundice
বাচ্চার জন্ডিস নিয়ে আমাদের মনে অনেক রকম ভয় কাজ করে। যাঁরা ভবিষ্যতে সন্তানের মা হবেন তাঁদের কিছুটা হলে ও কাজে লাগবে আজকের লেখাটি, এই আশা করছি। হবু মায়েদের জন্য অনেক শুভ কামনা !
কেন হয় (why baby jaundice):
১।শিশুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম হলে।
২।মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে।
৩।অপরিণত বয়সে (৩৭ সপ্তাহের কম সময় মায়ের গর্ভে থেকে) বাচ্চা জন্ম নিলে।
৪।মায়ের শরীরে কোনো অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হলে।
৫।বিভিন্ন ধরণের জেনেটিক অথবা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কোন সমস্যা।
৬।মায়ের লিভারে কোন সমস্যা থাকলে।
৭।নবজাতকের লোহিত কণিকায় কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে।
৮। জন্মের সময় যে কোন সংক্রমণ, যেমন-রুবেলা,সিফিলিস।
৯।গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট
কোন ওষুধের ব্যবহার।
লক্ষন কিঃ
১। প্রধান লক্ষণ হল
চোখ (baby with jaundice eyes) ও প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যাবে। প্রথমে মুখ থেকে শুরু হয়ে তারপর বুক, পেট এবং পা হলুদ হয়ে যায়।
২। বাচ্চার শারীরিক দুর্বলতা।
৩। জ্বর জ্বর
অনুভূতি কিংবা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
৪। বমি বমি ভাব
অথবা বমি।
৫। তলপেটে মৃদু বা
তীব্র পেট ব্যথা ও পেট ফুলে যেতে পারে।
৬। চুলকানি হতে
পারে।
৭। ওজন কমে যেতে পারে।
৮। নড়াচড়া কম করবে।
কি কি জটিলতা হতে পারেঃ
১।
শ্রবণশক্তির
আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতি
৩।যকৃতের সংক্রমণ।
৪।দৃষ্টি শক্তি হ্রাস।
৫।মানসিক বিকাশে বাধা।
কি করবেন (baby jaundice treatment):
১। দিনে দুইবার শিশুকে হালকা রোদে ১০ মিনিট করে রাখবেন। তবে শিশুকে কড়া রোদে বা সূর্যের আলোতে সরাসরি রাখবেন না। আর বিলিরুবিনের মাত্রা যদি খুব বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী হয় বাচ্চাকে ফটোথেরাপি দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
২। সকল নবজাতকের জন্ডিসের ঝুঁকি বিবেচনা করে ৩-৫
দিন বয়সে বিলিরুবিন পরীক্ষা করা উচিত।
৩। নবজাতক উচ্চমাত্রার জন্ডিসে আক্রান্ত হলে পরে
তাদের শ্রবণশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা প্রতিনিয়ত ফলোআপ
করতে হবে।
৪।ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে গর্ভাবস্থায় মায়ের এবিও, আরএইচ রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।
৫। লক্ষন দেখা দিলে দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ (baby with jaundice treatment) নিন।
প্রতিরোধঃ ( সবার জন্য প্রযোজ্য)
১। হেপাটাইটিস এ এবং
হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
২। সব সময় ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করুন রক্ত দেয়া বা নেয়ার সময়।
৩।মদ পান ও নেশাদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৪।বাচ্চা বা মায়ের জন্ডিস থাকাকালীন,শিশুর বুকের দুধ খাওয়ানো। এটি তার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দ্রুত অপসারণে অবদান রাখে ।
৫। সেলুনে নতুন ব্লেড দিয়ে সেভ করুন।
৬।যে কোন রাসায়নিক পদার্থ নির্গমন (কারখানা বা অন্য যে কোন) থেকে যতটা
সম্ভব দূরে থাকুন।
৭।তাজা এবং গরম খাবার খান।
৮। ফিল্টার করা বা ফোটানো পানি ছাড়া খাবেন না।
৯। নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করান।
কখন ডাক্তারের কাছে
যাবেন
১।শুধু মুখ হলুদ হলে,বুঝবেন
খুব বেশি বাড়েনি। তবে বুকে, পেটে,পায়ের
তলা,হাতের তালুতে হলুদ ভাব দেখা দিলে বুঝতে হবে গুরুতর।
২।বাচ্চার খিঁচুনি হলে।
৩।রক্তচাপ
কমে গেলে।
৪। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ফারেন হাইট (৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) বা তার বেশি হলে।
জেনে রাখুনঃ
১।শতকরা ৮০ ভাগ নবজাতকই কমবেশি জন্ডিসে ভুগে থাকে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লিভার এনজাইমের কমতির জন্যে এ রকম হয়ে থাকে। তবে বিলিরুবিন বেশি
না হলে ভয়ের কিছু নেই।
২।মা’র যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস
জনিত জন্ডিস হয়ে থাকে তবে শিশুর জন্মের সাথে সাথেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে হেপাটাইটিস
বি ভাইরাসের টিকা দেয়া অত্যন্ত জরুরি।
৩।মা’র নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ আর শিশুর পজিটিভ রক্তের গ্রুপ থাকলে জন্ডিস বেড়ে যাবে।
৪। “ব্রেস্ট মিল্ক জন্ডিসে” জন্মের পর চতুর্থ দিন থেকে সপ্তম দিনে রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে গিয়ে তারপর কমতে শুরু করে। এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত অল্প মাত্রার জন্ডিস থেকে যেতে পারে। তবে এটি শরীরের বিশেষ কোন ক্ষতি করে না।

কোন মন্তব্য নেই
If you have any doubts please let me know